Skip to main content

Posts

ডুয়ার্স সফরনামা: প্রথম দিনের কাহন

গতবছর উড়িষ্যা ট্রিপে বসেই ঠিক হয়েছিল এবছরের ডেস্টিনেশন ডুয়ার্স। প্রস্তাবটা অনির্বানই দিয়েছিলো। চল এবার ডুয়ার্স যাই, বক্সা-লেপচাখা-জয়ন্তী আর ফেরার পথে কোনো একটা জঙ্গল। প্রস্তুতি শুরু হলো সেই মতন। প্রতিবারই যা হয় - কটা টিকিট কাটা হবে সেই নিয়ে টানাপোড়েন। এই চার মাস আগে টিকিট কাটার গপ্পোটা বড্ড ঝামেলার। তাই মোটামুটি গড়ে হিসেব করে ৯ টা টিকিট কাটা হলো। উত্তরবঙ্গে যাওয়া পাকা ।টিকিট কাটার ঝঞ্ঝাট নিয়ে আমি গপ্পো ফেঁদে বসলাম। (দ্রঃ  টিকিটপুরাণ ) ফেরার টিকিটের দিনই হলো ঝামেলা। কাঞ্চনকন্যায় ওয়েটিং হয়ে গেলো। কুমার কত্তার সব কাজ একদম যথাযথ হওয়া চাই, তাই কনফার্ম হয়ে যাবে এই আশা রেখেও পরের দিনে কাঞ্চনজঙ্ঘায় কনফার্ম টিকিট কেটে রাখলো। মাসবদলের সাথে সাথে আমাদের যাওয়ার সদস্য সংখ্যাও পাল্টাতে থাকে। কখনো ৯ থেকে ৭ কখনো বা ৫ আবার কখনো ৬। দীপঙ্কর দা মানে যিনি আমাদের ডুয়ার্সের দিনযাপনের ব্যবস্থাপনার সম্পূর্ন দায়িত্বে ছিলেন তারও মাথা খেতে থাকি। কখনও বলি ৯ জন যাচ্ছি না ৭ জন, কখনও বলি  ৫ জন কনফার্মই কনফার্ম; আবার যাওয়ার একমাস আগে বলি, একটু ম্যানেজ করে  ৮ জনের ব্যবস্থা করে দাও। কিভাবে যে উনি সবটা অ্যারেঞ্জ করেছিলেন
Recent posts

হিজি বিজ্ বিজ্ এবং প্রেম

এই অসহ্য লোকটার কথা ভেবে ভেবে আমার সমস্ত ভালো ভালো গানের ভালো ভালো কথা সুর কানে এবং মনে বাজে। আর ঐ লোকটা সব সুর তাল ঘেঁটে ঘ করে দেয়। এই দুদিন আগে, ওর জন্মদিনের দিন সব কাজ মিটিয়ে বসেছি। মন টা বেশ ভালো লাগছে যা যা রান্না করবো ভেবেছিলাম, সব করেছি। বেশ ভালোই হয়েছে। সারপ্রাইজ গিফ্ট টা দিয়ে একদম চমকে দিয়েছি। সবকিছু একদম যেমন যেমন চেয়েছিলাম তেমন তেমন ই হয়েছে। ভালো করে স্নান করে, ফ্রেশ হয়ে টেবিল ফ্যান টা চালিয়ে একটু জিরোচ্ছি, খুব গান শুনতে ইচ্ছে হলো, বেশ ভালোবাসার গান। আমার ফোনের ওই হেডফোন গোজার পোর্টটা শট হয়েবসে আছে। তাই স্পিকারেই চালালামঃ ইয়ে লাল ইশক " মেরা নাম ইশক, তেরা নাম ইশক, মেরা নাম ইশক, তেরা নাম ইশক মেরা নাম ইশক, তেরা নাম ইশক মেরা নাম তেরা নাম, মেরা নাম ইশক" আহা শুনতে শুনতে পুরো ডুবে গেছি। অসাধারণ গান, গানের কথা, সঙ্গে অরিজিতের গলা, পাশে কুমার বসে ফোন এবং গল্প বইয়ে ব্যস্ত, তার দিকে চেয়ে চেয়ে পরানে ডগমগ করা প্রেম প্রেম ভাব ... উফফ আর কি চাই। তখনই ... " এই শোনো " কিছু না বলে ভুরু কুঁচকিয়ে এবং উঁচিয়ে জানতে চাইলুম, " কি? " " এই যে ইনি

প্রেম ও কবিতা

রবিবার রাত ১১.৩০। কুমার আমার সতীনে ডুবে৷ চার-পাঁচটা সতীন খাটে ছড়িয়ে, তাদের নিয়ে মশগুল৷ এক নম্বর সতীন পুজোবার্ষীকি আনন্দমেলা, দুনম্বর দেশ পত্রিকা, তিন নম্বর রবিবারের আনন্দবাজারের রবিবাসরীয় etc etc etc... আমি টিভিতে আমার প্রিয় হাসির অনুষ্ঠানে বুঁদ ৷ গল্পটায় দেখাচ্ছে, একজন বউ তার বরকে জেরা করছে যে সে কেন তাকে নিয়ে কখন কোন কবিতা লেখে না, আচমকা প্রশ্নে বর চমকে চ ৷ দেখতে দেখতে হঠাৎ আমারও মাথায় বদ বুদ্ধি চাপল। কুমারকে শুধলাম, " তুমি আমায় নিয়ে কিছু লেখো না কেন? আমি কতঅঅ কিছু লিখি৷ " কুমার আচমকা প্রশ্নে, সতীনদের থেকে মনসংযোগ এক সেকেন্ডের জন্য সরিয়ে বলল," আমি কি পারি বলো তোমার মত অত ভালো করে গুছিয়ে লিখতে! " বলেই সতীনের কাছে ফিরে গেলেন ... আমিও  ছাড়ব না," খালি বাজে কথা, political কিছু , বিজ্ঞান নিয়ে যখন এত্ত ভালো ভালো লেখো , তার বেলা ?" "আরে ওসব তো অন্যরকম । আমি তোমায় নিয়ে যা ভাবি , তা কি বলে বা লিখে বোঝাতে হবে ? " সতীনের দিকে মন দিয়েই বলে চলল। " খালি ডায়লগ ... তুমি জানো এককালে কেউ একজন ছিল যে আমায় নিয়ে সত্যি ভালোবেসে কবিতা লিখত ... "

কন্যের কেশ কথন

ছোটবেলা থেকেই আমার লম্বা ঘন চুল ছিল। খুব ভালো লাগতো আমার। মা মাঝে মধ্যে গজগজ করতো। তার কারণও ছিল অবশ্য। সকালে স্কুলে বেড়োতাম ৮.৩০ টায়। ভোর বেলা উঠে কাজ গুছিয়ে, রান্না করে, আমার টিফিন তৈরি করে তারপর বসতে হত মাকে আমার চুল বাঁধতে। স্কুলের নিয়ম ছিল বড় চুল মানেই দুটো বিনুনি বেঁধে যেতে হবে। প্রায়ই বলত,"উফ তোর চুল বাঁধতে আমার হাত ব্যথা হয়ে যায়, দেব ছোট করে এবার।" আমার সাপোর্টে সবসময় ছিল বড়মা। বলত চিন্তা করিস না; তোর মা অমন বলছে, আমি কাটতে দেবই না তোর চুল। আর তাছাড়া আমিও জানতাম মার ওসব কথার কথা। একটু বড় হতে মজা করে যদি বলতাম ভাবছি চুলটা কেটেই দেবো, ওমনি বড়বড় চোখ পাকিয়ে বলতো, "খবরদার, একদম নয়।" সেই থেকে লম্বা ঘন একঢাল চুল। খুব ভালো লাগতো আমার। দেখতে শুনতে কোনদিনই তেমন ছিলাম না। কিন্তু আমার চুল দেখেই নিজেরই মন ভরে যেত। স্কুল থেকে ফিরলে সন্ধ্যে বেলায় মা কালো কার দিয়ে বেড়া বিনুনি বেঁধে দিত। কি যে অদ্ভুত দেখতে লাগতো তারপর কি বলবো। রাত্তির বেলায় চিত হয়ে শুতেই পারতুম না, ঘাড়ে ব্যথা হয়ে যেত, পাশ ফিরে শুতে হতো ।  বাবা মারা যাওয়ার পর, নিয়ম-কানুন মেটার ১৩ দিন পর যখন চুল

দীঘার ডায়েরি

উঠলো বাই তো চট করে দীঘায় পালাই। রোজকার জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে, বাঙালির ডাল-ভাত বেড়ানোর জায়গা মানে দীঘায় চললুম 2 দিনের জন্য। বেড়াতে যাওয়ার সবকিছুই বড্ড ভালো। যাবো যাবো আনন্দ, জিনিস পত্র নেয়ার লিস্টি বানানো, গোছ-গাছ থেকে শুরু করে সমুদ্দুরের বা পাহাড়ের হাওয়া খাওয়া। তবে সবচেয়ে মিষ্টি ব্যাপার হলো, প্রতি বার বেড়োনোর আগে বাবা - মার সামনাসামনি এবং আরেক মা ওভার ফোনে সতর্কবার্তা। আমরা বেড়াতে গেলেই আমাদের বাড়ির সবাই এক্সপার্ট হয়ে যায়, কেউ বা আবহাওয়া বিশারদ হয়ে যান কেউ বা ভূতত্ববিদ। এই  যেমন আজ বাবা বলল, "একদম জলে নামবি না, কদিন ঝড় বৃষ্টি হবে বলছে", মা বলল, " নানা ঝড় বৃষ্টি হোক বা না হোক জলে নামার কোনো দরকারই নেই", আরেক মা ফোনে বলল, "সমুদ্রের অবস্থা খুব খারাপ নামিস না যেন।" এই একইরকম সতর্কবার্তা চলতেই থাকে পাহাড়,সমুদ্র বা জঙ্গল যেখানেই যাই । আমরা নিজেদের যতই দিগ্গজ ভাবি না কেন বাবা-মা দের কাছে সেই চার-পাঁচ কি তারও কমেই আটকে আছি। আমরাও হাসতে হাসতে নিজেরদের মধ্যে চোখাচুখি সেরে, ঘাড় নেড়ে ভালো বাধ্য বাচ্চাদের মতো তাদের আস্বস্ত করে দি। প্রতিবার আসছি মা,আসছি বাবা বলার পরই

জোড়া জন্মদিন

জন্মদিন মানে মার একটু বেশি আবদার-অধিকার-ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল, জন্মদিন মানে বন্ধুদের মন ভালো করা শুভেচ্ছা, জন্মদিন মানে কুমার বাহাদুর কে আরেকটু বেশি অত্যাচার করা , জন্মদিন মানে দুই বাড়ির সবার থেকে আর একটু বেশিই আদরে উচ্ছনে যাওয়া, জন্মদিন মানে বাকি ৩৬৪ দিনের থেকে একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা, সারাদিন মনের মধ্যে মিষ্টি মিষ্টি ভাব। এই ১২ই আগস্ট তারিখ টা আমাদের কুমার নিবাসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই একই তারিখে এই বাড়ির তিন প্রজন্মের তিন জনের জন্মদিন। আমার দাদু ইন ল, মা  ইন ল আর আমার। দাদুকে আমি দেখিনি। কুমার তখন বেশ ছোটই যখন দাদু মারা যান। বাবা-জেঠুর কাছে শুনেছি দাদুর জন্মদিন এই তারিখেই। দাদুকে পাই না কিন্তু আমার আর মার যুগ্ম জন্মদিনটা বেশ ভালোই কাটে। ওদিকে আবার আমার মাতৃদেবীর আদেশ সারাবছরের ঐদিনটা তেনার, তিনি কাউকে ভাগ দিতে পারবেন না। দু দিকেই দেখতে হবে, দুদিকে দুই মার ইমোশন। তাই একটা মধ্যপন্থা অবলম্বন করি। প্রতি বছরই আমি আগের দিন রান্না করে মাকে খাওয়াই। রাত্রে কেক বানিয়ে রাখি, পর দিন সকালে পায়েস করে, বাড্ডে গার্লকে কেক পায়েস খাইয়ে, পারি দি মার কাছে। মা এখন সবকিছুই ভুলে যায়। নিজ

চিরসখা "সন্দেশ"

কাল সন্ধ্যেয় নানা রকম গপ্পের মধ্যে কথায় কথায় "সন্দেশ" এর কথা উঠলো। কুমার বাহাদুরের জীবনে দুরকম সন্দেশই কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মোটামুটি ওর কাছের লোকজন সবাই জানে। এক সন্দেশে তার উদরতৃপ্তি ঘটে আরেক "সন্দেশ" তার মনের আরামের খোরাক। সেই ৯৫ সালে মেজপিসি "সন্দেশ" পত্রিকার গ্রাহক করে দিয়েছিলো। তারপর থেকেই কুমারের অন্তরতম সঙ্গী হয়ে ওঠে "সন্দেশ"। গত ২৫ বছরের সন্দেশের সব সংখ্যাই আছে বোধকরি ওর সংগ্রহে আছে। এখনো অন্যান্য যেকোনো পুজোসংখ্যার আগে "সন্দেশ" কবে বেড়োচ্ছে সে খবর জোগাড়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ থাকে। আমায় আগেও বলেছিলো, কাল যখন "সন্দেশ" এর কথা উঠলো, হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। জিগালুম,  সন্দেশে তোমার একবার লেখা বেড়িয়েছিলো না??? হ্যাঁ, হাত পাকাবার আসরে। তোমার কাছে আছে সেই সংখ্যাগুলো?? থাকবে না কেন!! বের করোতো। এমনিতে তো ভুলোরাম, কোথায় কি রাখে দুমিনিট অন্তর ভুলে যায়, কিন্তু নিজের আজীবন দোসরদের খুঁজে পেতে তার বিন্দুমাত্র দেরী হয় না। বলতে না বলতে নিয়ে চলে এলো। ৪ টে গল্প বেড়িয়েছিলো, একটা গল্পের সাথে একটা ছবিও ছিল কিন্তু সেটা কোনো কা