উফফ এমন অজ পাড়া গাঁয়ে বিয়ে হয়েছে যে ঝড় ওঠার আগেই কারেন্ট চলে যায়। আমাদের ভদ্রেশ্বরে এই সব হয় না, হতও না বাপু। ছোটবেলার আলে কালে খুব বড় কোনো বিপত্তি ঘটলে তখনই একমাত্র লোডশেডিং হতো। আর আমরা বাড়ির সবাই মানে মা,বাবা, দাদারা, জেঠু, বড়মা,পিসি একসাথে দালানে বসে হ্যারিকেন আর কাফ সিরাপের বোতলে কেরোসিন তেল ভরে সলতে লাগিয়ে তৈরি করা লম্ফ জ্বালিয়ে আড্ডা দিতাম জমিয়ে। যদি রাত্তিরের রান্নার আগে অব্দি কারেন্ট না আসতো, মা-বড়মা ওই লম্ফই আটার বা চালের ড্রামের ওপর উঁচু করে বসিয়ে রান্নাও করতো। তো যা বলছিলাম আজ তো ঝড়-বৃষ্টি শুরুর আগেই,আকাশে মেঘ জমতে দেখেই, সেই সাড়ে ৫ টায় কারেন্ট বাবাজীবন চোখ বুঝলেন। আমিও অভিজ্ঞ হয়ে গেছি, যেই না আকাশে মেঘ জমতে দেখেছি ওমনি সকালের খাবার গুলো ঝপাঝপ মইক্রোয়েভে গরম করে নিয়েছি, জানি উনি এই গেলেন বলে। যা ভেবেছি ঠিক তাই, খাবার গরম শেষ হতে না হতেই কারেন্টও ঝপ। একবার গেলে কখন যে তিনি আসবেন তা জানা নেই। ইনভাটারের আয়ুও বাঁচিয়ে রাখতে হবে তো রাত্তিরের খাওয়া আর পাখার জন্য। তাই কাজকম্ম মিটিয়ে ঝিমঝিমে আলো জ্বালিয়ে বসে মশার কামড় খাওয়া ছাড়া আর বিশেষ কিছুই করা যায় না। না পড়া যায় বই না চালানো...
প্রতিদিনের একই ভাবে চলে চলা জীবনের, ছোট ছোট মুহূর্ত গুলোকে অক্ষরবন্দী করে এক চিলতে হাসির খোঁজেই এই ইচ্ছেলিখন।