Skip to main content

Posts

Showing posts from November, 2017

পুরনো কাসুন্দি

সালটা ২০০৮, বাবা মারা যাওয়ার কিছু মাস পর, আমার পরম পূজনীয় জননী একটু সামলে উঠতেই, স্থির করলেন এখন থেকে ওনার জীবনে একম-অদ্বিতীয়ম লক্ষ্য হলো আমার বিয়ে দেয়া। ভেবেছিলো আমায় "পার" করেই সব কাজ মিটে যাবে, আমি খাবো বাঁশ এবং তিনি ড্যাং ড্যাং করে বাবার কাছে চলে গিয়ে সুখে - শান্তিতে করবেন স্বর্গবাস। তখনও কুমার বাহাদুরের আগমন ঘটেনি বলাই বাহুল্য। মাকে আমি বুঝিয়ে উঠতে পারতাম না যে, দেখে-শুনে বিয়ের জগতে আমার "দাম " নেই বললেই চলে। বিয়ের খদ্দেরদের ফর্সা, সুন্দরী, স্লিম এবং শিক্ষিত মেয়ে চাই। অনেকের আবার শিক্ষিত হলেও আপত্তি। সুতরাং সে গুড়ে রাশি রাশি বালি। তবুও মার অদম্য ইচ্ছে, শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা এবং ইমোশনাল কাতুকুতুর কাছে হার মেনে "দেখে-শুনে বিয়ে" পুজোর জোগাড়ে নেমে পড়ি। এই পুজোর সর্বপ্রথম নিয়ম, সুন্দর শাড়ি পরে, ভালো করে সাজুগুজু করে একটি ছবি তুলতে হবে।যাতে পাত্রপক্ষ ঝপ করে দেখে টপ করে পছন্দ করে ফেলে। তাই হলো সুন্দর সাজু গুজু এবং শাড়ী পরে ছবি তোলা হলো। এই ছবিটি যে কত জায়গায় ঘুরেছে তার ঠিক নেই। আত্মীয়-পরিজন, ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট, কুরিয়ার অফিস, খবরের কাগজের অফিস, ই-মেল

অন্য বিকেল

বাসের মধ্যে ভীড়ে তখন ধাক্কাধাক্কি জোরদার, এদিকে ব্যাগের মধ্যে আমার শ্যামের বাঁশি বেজেই চলেছে। কোনরকমে আমার শ্যামকে থুরি ফোনটাকে ধরতেই কুমার জিগালো, কোথায় তুমি? ছুটি হয়ে গেছে, আপাতত গরুরগাড়ি থেকেও ধীরে চলা এক বাসে ভীড়ে চেপ্টে রয়েছি, কোনোরকমে ফোন টা বের করে ধরলাম, কি বলছো?? চটপট বল?? কতদূর পৌঁছেচ?? এই বাগবাজার, কেন?? হসপিটাল মোড়ে নেবে পরো, আমি যাচ্ছি আমি তালডাঙ্গা অব্দি টিকিট কেটে নিয়েছি তো!!! উফ, তাতে কি?? যা বলছি করো না, নামো। আচ্ছা ঠিক আছে। নেমে পড়লুম।কিছুক্ষণের মধ্যেই কুমার এসে হাজির। বলল, চলো একটু এদিক ওদিক করে বাড়ি ফিরব। উড়ুক্কু চড়ে এদিক ওদিক করতে করতে , আমাদের এই এলাকায় হওয়া প্রথম ফ্লাই ওভারে গিয়ে একটু নামলাম । লোকাল লোক জন একেই আবার বাই পাস বলে। একজনকে জিগেস করেছিলাম , "আচ্ছা দাদা এই রাস্তা দিয়ে গেলেই কি ফ্লাই ওভার টা পাবো??" তিনি খানিক্ষন আমাদের মেপে বললেন, " না, এটা বাইপাসের রাস্তা "। যাই হোক, ওনার বাইপাস এবং আমাদের ফ্লাই ওভারে পৌঁছে, বেশ ভালো লাগছিলো। বেশ ফাঁকা, গাড়ির হর্নের আওয়াজ খুব একটা নেই, মানুষের ভিড় নেই,শান্ত, নির্জন। শুধু মাঝে মা

জগদ্ধাত্রী দর্শন

আমাদের এখানে জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই সারা বছরের অপেক্ষার উৎসব। ঠাকুর দেখায় ছোট থেকে খুব একটা উৎসাহ ছিল না, কারণ বেশিদূর অব্দি হাটা হাটি করতে পারতুম না। তবে জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই জগদ্ধাত্রী নবমী মানেই মা র সাথে তেঁতুলতলা অভিযান। তেঁতুলতলার জগদ্ধাত্রী ঠাকুর bhadreswar এর সবচেয়ে বিখ্যাত পুজো। কোনো ঝকমকে থিম প্যান্ডেল নয়, সাবেকি সাজে সাধারণ নাটমন্দিরের প্রতিমা। বহুদূর থেকে মানুষ আসেন পুজো দেখতে। অষ্টমির সন্ধ্যে থেকে লাইন পরে নবমী পুজোর জন্য। এই অঞ্চলের সকলেরই, নবমীর খানিকটা সময় তেঁতুলতলার জন্য বুক থাকবেই থাকবে। খুব ছোট বেলায় এত ভিড় হতো বলেই মা আমাকে একবার ঠাকুর দেখিয়ে এনেই মন্দিরের ঢোকার কিছুটা আগে বাবাদের রাজনৈতিক দলের যে বুক কাউন্টার থাকতো, সেখানে বাবার কাছে বসিয়ে দিয়ে যেত। সেই থেকেই নবমীর তেঁতুলতলা যাওয়াটা একরকম যেন অভ্যেসই হয়ে গেছে। এই বছরও নবমীর সকালে উঠেই মাকে ফোনে বলে দিলাম আমরা যাচ্ছি। মা র তো সব আনন্দই আমায় ঘিরে, তাই সবার উৎসব ষষ্টি থেকে শুরু হলেও আমার মার কাছে আমি যেদিন যাই সেদিনই উৎসব শুরু। বেরোনোর জন্য তৈরি হচ্ছি, হঠাৎ ওপরে খুব জোর একটা আওয়াজ হওয়ায় ছুটে গিয়ে দেখি, মা মানে আমার