Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2017

পুজোর গন্ধ

কুমার বাহাদুর আজ আমাদের বহু প্রতিক্ষার অানন্দমেলাকে বাড়ী এনেছে ৷ বইটা আমি হাতে পেতেই প্রতিবারের মতন......খুলে জোরে এক নিশ্বাস গন্ধকে মনের মধ্যে পুরে নিলাম ৷ এক নিমেষে মনে হলো অনেক গুলো বছর পেছনে চলে গেছি ...... স্কুলে যাওয়ার সময় খেতে বসে বাবা বলছে "বুড়ু , যা যা পুজোসংখ্যা কিনবি লিষ্ট করে মিনি কাকু ( খবরের কাগজ দেয় যে কাকু) দিয়ে দিস.... ফুরিয়ে গেলে পাবি না " "মিনি কাকুকে তিন দিন আগেই দিয়ে দিয়েছি....এখনও দেয়নি " "বলেছিস যখন ঠিক দিয়ে দেবে ৷" "কবেএএ???" আর কিছু না বলে আমার পুজোসংখ্যা তখনও অব্দি না পাওয়ায় দুঃখ দুঃখ মুখখানা দেখে বাবা ইস্কুলে চলে গেল ৷ বিকেলে যখন ফিরল ব্যাগখানা আমার হাতে ধরিয়ে বলল "এই নে , বলেছিলি রে & মার্টিন বইটা লাগবে ,আনতে দিয়েছিলাম লাল্টুকে ( বইয়ের দোকানের দাদা) , এনে দিয়েছে৷ " আমি ব্যাজার মুখে ব্যাগ খুলতেই দেখি ভেতর থেকে উঁকি মারছে আমার বহু প্রতীক্ষিত পুজোসংখ্যা৷ আনন্দে আত্মহারা হয়ে ঝপ করে বইটি খুলে এক নিশ্বাস গন্ধ মনের মধ্যে পুরে নিলাম ..... বাবা বলল , " শুধু গন্ধ শুকবি জানলে , বইগুলো এত তাড়াহুড়ো ক

মা Day

ছোটবেলায় একটা গপ্পো পড়েছিলুম বিদ্যাসাগর মহাশয় মা'র সাথে দেখা করতে যাবেন বলে দুরন্ত দামোদর সাঁতরে পার হয়েছিলেন, আমি না বিদ্যাসাগর না আমি জানি সাঁতার ... তবে হ্যাঁ, মা'র কাছে যাওয়ার তাগিদটা একদম ষোলো আনা, এক কড়িও ফাঁক নেই তাতে৷ সারা সপ্তাহের ব্যস্ততার মধ্যে, একটা দিন মা'র, ওই দিনটায় আমার পুরোটাই মা'র৷ আজ ছিল সেই মাday৷ এদিকে সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার, আর ক্ষণে ক্ষণে অশ্রুপাত৷ ভাবলাম বিকেলে ঠিক কমে যাবে৷ ও বাবা!!! কোথায় কী??? ৩-৩.৩০ বাজতে না বাজতে আকাশ বাবু হাত পা ছড়িয়ে দেদার কান্না জুড়লেন ..., ঝমাঝম ঝমাঝম ঝমাঝম৷ কিন্তু ঠিক যখন করেছি মা'র কাছে যাব, যাবই যাব, কেউ বাধতে পারবে না৷ আমার নতুন বাবা-মা কখনই কোনকিছুতেই বাধা দেন না৷ বাবা শুধু কুমার বাহাদুরকে বললেন, " আজ আর গাড়ী নিয়ে ওকে পৌছতে যাস না, বাসে যাস৷ " কিন্তু সে তো সেসব শোনার পাত্র না, বলল, " না না , কিচ্ছু হবে না৷ " আপাদমস্তক দুজনে রেনকোট পরে, ঝমাঝম বৃষ্টিতে আমাদের উড়ুক্কুযানে চড়ে বেরিয়ে পড়লুম৷ এখানে ওখানে জল থৈ থৈ, ওপর থেকে অবিরাম বারিধারা, ঠান্ডা হাওয়া, চোখে মুখে বৃষ্টির ছাট ... অদ্ভুত একটা ভালো

মনপুরাণ

আমার জীবনের অনেক ভালো দিকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ দিক হলো আমার এই ultra sensitive স্বভাবখানা ৷ আর এই উৎপাতে স্বভাবের মেন ভিলেন হলেন আমার "মন"৷ আজ্ঞে হ্যাঁ!! এই যে মন, তিনি সবাআআর কথা ভাবেন, সবার দিক বুঝতে চান, সবার মন পাওয়ার মতন অসম্ভব কাজ করে গিয়ে আছাড় খান এবং এই সকল কাজের দ্বারা তিনি নিজের ওজন বাড়ান৷ যা ঘটছে, ঘটে গেছে বা ঘটতে পারে আন্দাজ করতে চেয়ে সেই ভাবনায় ডোবেন, তাকে যে ভালোবাসে তার জন্য ভাবেন, যে তাকে মন্দবাসে ,সে কেন মন্দবাসছে, তার দিক টাও ভাবেন, কেউ একচিলতে প্রশংসা করলে আল্হাদে আটখানা হয়ে যান, আবার যদি কেও নিন্দে করে আঘাতে আটখানা হয়ে, যে নিন্দে করছে তার পক্ষ সমর্থনে যুক্তি সাজান ৷ উফফফ্!!! কি যে জ্বালা কি বলব!!!!! এনার সারাদিনের ধুকপুকানির চোটে আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত হবার জোগাঢ় ৷ বাপরে বাপ!!!! মাঝে মাঝে মনে হয়, এই যে মন বাবুর অবস্থাখানা এক্কেবারে মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করার কাঁচের বাটির মতন হয়ে গেছে৷ ফ্রীজ থেকে বের করো ঠান্ডা, একটু সময় দাও স্বাভাবিক হওয়ার, তারপর গরম আঁচে চালান করো ৷ আবার গরম তাত থেকে বের করে, স্বাভাবিক হবার সময় দাও, তারপর তাকে ঠান্ডা জলে ধোও ৷ তাপমাত্রা

মেঘের সঙ্গে রেষারেষি

এই গত মঙ্গলবারের কথা, একটা জমজমাটি রোমহর্ষক রেস হলো বটে৷ সেই ছোটবেলায় স্কুলে যেমন হতো, কে আগে ফিনিসিং লাইন বা ফিনিসিং পয়েন্টে পৌছতে পারবে, ঠিক সেরকম ৷ কম্পিটিটর খুবই ষ্ট্রঙ্গ ছিল , তাকে হারানো মুখের কথা নয়৷ তবুও তাকে হারিয়ে ছেড়েছি, হার মানতে বাধ্য করেছি৷ কুমার বাহাদুরের কলেজে পরীক্ষা না থাকায় তাড়াতাড়ি যাওয়া ছিল না৷ আমায় স্কুলে নামিয়ে ও কলেজ যাবে বলল৷ তৈরি হয়ে উড়ুক্কু যানে বসার সময়ই আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি করণ জোহাড়ের কভি খুশি কভি গম চলছে মানে কোথাও একগুচ্ছ মুখগোমড়া মেঘ, কোথাও আবার ঝলমলে আকাশ৷ গোমরামুখোটা আমাদের মাথার ওপরই ঘুরপাক খাচ্ছিল৷ কত্তা বলল, " দুজনেই রেন কোটটা পড়েই বেরোই , যখন তখন নামতে পারে ৷ " " একদম না, এই পচা গরমে অসম্ভব , ঐ রেনকোট পরে, বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকা৷ আর তাছাড়া দেখো না এই খানে গোমড়ামুখোটা রয়েছে, জোরে চালিয়ে ঐ দিকের সাদা আকাশের নিচে চলে গেলে আর ভেজাতে পারবে না৷" "আরে , অমন হয় নাকি, আমরা ঐ দিকে যাওয়ার আগেই মেঘ পৌছে যাবে৷ " " না আমরাই আগে যাব৷ " " উফ, তুমি এমন পুচকিপনা করো না, তুমি কি এখন মেঘের সাথে রেস করবে নাকি???