Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2018

নয় ছয় কাণ্ড

ঘটনাটা কিছুদিন আগের। ঠান্ডাটা এত জম্পেশ পড়েছে যে চটি ছাড়া মেঝেতে পা ঠেকালেই পা টু ব্রহ্মতালু ঠকঠকিয়ে যাচ্ছে। দিদি আসে খুব সকাল সকাল।কদিন ধরেই ভাবছি, ওর জন্য একটা ঘরে পড়ার চটি নিয়ে আসবো, এই ঠান্ডায় পায়ের নিচে পাপোশ রেখে রান্না করে। সেদিন আবার জল পরে সেই পাপোশ গেছে ভিজে, আমি আমার চটিটা দিয়ে বললুম পর তো, এটা পরে কাজ করো, বাড়ি যাবার সময় দিয়ে যেও। দোনা মনো করে গলিয়ে ফেললো,কিন্তু গলালেই কি হলো?? আমার চটি পরে সেতো ছপাত ছপাত করে। জিগালুম, তোমার পায়ের মাপ কতো গো দিদি?? ৬ গো বৌদি ওই জন্যই, নয় কি আর ছয়ে হয়!!! হ্যাঁ, তোমারটা পরে তো আমি হাঁটতেই পারছি না তো। কি আর করবে, বেশি হাঁটাহাঁটি করো না, করলেও সাবধানে করো। মনে মনে ঠিক করলুম, আজ এর একটা হস্তি নস্তি করেই ছাড়বো। আমাদের এখান থেকে স্কুল অব্দি যাওয়ার ডিরেক্ট অটো পাইনা। মাঝখানে একটা স্টপেজে নেমে আরেকটা অটোয় যেতে হয়। তা ওই মাঝের স্টপেজে নামতেই সামনেই একটা জুতোর দোকান। ঢুকলাম ভেতরে, দোকানটা সবে খুলছে তখন। আমায় ঢুকতে দেখে দোকানে মালিক আরাধ্য দেবতা কে ধুপ ঘোরাতে ঘোড়াতেই দাঁত চিপে গম্ভীর গলায় বললেন, "জুতোটা বাইরে খুলে আশা হোক।"

বিবাহ আখ্যান

একে অপরকে সইবার এবং একসাথে রইবার বয়স হলো চার। কুমার বাহাদুর আর আমি আজকের তারিখেই বিয়ের পিঁড়িঁ তে বসে এই অভূতপূর্ব দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছিলাম। যাইহোক দুর্ঘটনাটি যখন ঘটেই গেছিলো ভাবলাম ভালোই হলো, এক খানা বর পাওয়া গেল। বেশ নতুন নতুন একটা ব্যাপার। ছোট থেকে বাবা, মা ,জেঠু, বড়মা, পিসি, দাদাদের সাথে একই বাড়িতে, একই পরিবারে থেকেছি তাই নতুন বাড়ির বাবা, মা, জেঠুকে নিয়ে চিন্তা ছিল না কিন্তু এই বরের সাথে ঘর করাটা ঠিক কেমন হয়, তা নিয়ে বেশ একটা উৎসাহ ছিল। গত ৪ বছর কুমার বাহাদুরের সাথে ঘর করে বর বলতে যা বুঝলাম তা অনেকটা দীপাবলি বা চৈত্রসেলের সময় পাওয়া বিভিন্ন কম্বো প্যাক অফারের মতন। একটি বরের প্যাকেজে মার স্নেহ, বাবার নির্ভরতা, ভাই-বোনের খুনসুটি, বন্ধুত্বের ভরসা আর জীবন দোসরের অফুরন্ত ভালোবাসা ফ্রী ফ্রী ফ্রী।  এই যেমন কখনো কখনো মায়ের মতন সবকিছু নিয়ে টিক টিক করে। মিথ্যে কথা বলে ঘুম ভাঙায় ৬ টা বাজলে বলে ৯ টা বেজে গেল। বই পড়তে পড়তে বা নেট ঘাটতে ঘাটতে ঘুমিয়ে পড়লে চোখ থেকে চশমা খুলে বই বা ফোন বন্ধ করে গায়ের কাঁথাটা ভালো করে জড়িয়ে দেয়। কোনো কষ্ট হলে, শরীর খারাপ হলে আমার থেকে বেশি পীড়িত হয়।জোর করে জলের

মা

শীতকাল মানেই গরম গরম লেপে পা ঢুকিয়ে গল্পের বই পড়া। মার হাতের কড়াইশুটির কচুরী- আলুরদম আর ফুলকপি - নতুন আলু - টমেটো- মটরশুটি দিয়ে গরম গরম খিচুড়ি খেয়ে রসনাতৃপ্তি করা। ট্রাঙ্ক থেকে বের করা ন্যাপথলিনের গন্ধ মাখানো সোয়েটার,চাদর আর মার গা থেকে পন্ডস ক্রিম মাখানো মা মা গন্ধ। দু হপ্তা হয়ে গেল নানান ঝামেলায় মার কাছে যাওয়াই হচ্ছে না। আজ সকালে থেকেই বড্ড মা পাচ্ছে। ধুত্তোর চুলোয় যাক সব কাজ আজ মার কাছে যাবোই যাবো। ফোন লাগলাম মাকে, "আজ আমি আসছি।" গমগমে হাসি হাসি গলা বলে উঠলো, "কখন আসবি?? গরম জামাকাপড় কিছু বয়ে বয়ে আনিস না, আমি সব বের করে, রোদ খাইয়ে রেখেছি। স্কুল থেকে বেরোনোর সময় একটা ফোন করে দিস।" "আচ্ছা।" স্কুল থেকে ফিরে ঘরে ঢুকতেই দেখলাম রোদ থেকে তুলে নিয়ে আসা গরম গরম বালাপোস আমার দিকে আকুল নয়নে তাকিয়ে আছে। যা যা ঠান্ডায় পরার জামাকাপড় ছিল, সব লাইন দিয়ে সাজানো। কারণ মাতৃ মাপক যন্ত্র অনুসারে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে এবং ঠান্ডা আরো বাড়বে তাই, যাবতীয় গভীর ঠান্ডায় পড়া জামাকাপড় রা ট্রাঙ্ক থেকে বেরিয়ে সূর্যালোকে গা তাতিয়ে আমার অপেক্ষায় রয়েছে, কখন তাদের পরে আমি ধন্য করবো