কাল সন্ধ্যেয় নানা রকম গপ্পের মধ্যে কথায় কথায় "সন্দেশ" এর কথা উঠলো। কুমার বাহাদুরের জীবনে দুরকম সন্দেশই কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মোটামুটি ওর কাছের লোকজন সবাই জানে। এক সন্দেশে তার উদরতৃপ্তি ঘটে আরেক "সন্দেশ" তার মনের আরামের খোরাক। সেই ৯৫ সালে মেজপিসি "সন্দেশ" পত্রিকার গ্রাহক করে দিয়েছিলো। তারপর থেকেই কুমারের অন্তরতম সঙ্গী হয়ে ওঠে "সন্দেশ"। গত ২৫ বছরের সন্দেশের সব সংখ্যাই আছে বোধকরি ওর সংগ্রহে আছে। এখনো অন্যান্য যেকোনো পুজোসংখ্যার আগে "সন্দেশ" কবে বেড়োচ্ছে সে খবর জোগাড়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ থাকে।
আমায় আগেও বলেছিলো, কাল যখন "সন্দেশ" এর কথা উঠলো, হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। জিগালুম,
সন্দেশে তোমার একবার লেখা বেড়িয়েছিলো না???
হ্যাঁ, হাত পাকাবার আসরে।
তোমার কাছে আছে সেই সংখ্যাগুলো??
থাকবে না কেন!!
বের করোতো।
তোমার কাছে আছে সেই সংখ্যাগুলো??
থাকবে না কেন!!
বের করোতো।
এমনিতে তো ভুলোরাম, কোথায় কি রাখে দুমিনিট অন্তর ভুলে যায়, কিন্তু নিজের আজীবন দোসরদের খুঁজে পেতে তার বিন্দুমাত্র দেরী হয় না। বলতে না বলতে নিয়ে চলে এলো।
৪ টে গল্প বেড়িয়েছিলো, একটা গল্পের সাথে একটা ছবিও ছিল কিন্তু সেটা কোনো কারণবশত গল্পের সাথে বের না হয়ে পরের সংখ্যায় বেড়িয়েছিলো। গপগপ করে চারটে গপ্পো পরে ফেললাম। ১৩-১৪-১৫ বছর বয়সের মিট্টি মিট্টি মনভালো করা লেখা। কোনটা পাগলা দাসুর ছোঁয়া পেলাম তো কোনটা টেনিদার। কোনটা আবার বাড়ির দাদা-দিদিদেরই কান্ডকারখানা নিয়ে বানিয়ে গুছিয়ে নিজের মতন লেখা আবার কোনটা একদম স্বতন্ত্র, ওর নিজের মতন। পড়তে পড়তে আবার সেই পুরোনো আফসোস টা জেগে উঠলো। কেন যে এত্ত পরে বন্ধুত্ততা হলো, সেই সময় হলে হয়তো, সবার আগে প্রিয় বন্ধুর লেখাগুলো ঝপাঝপ পড়ে ফেলতুম।
ফেসবুক বলছে আজ বন্ধুত্বদিবস। তাই এই বিশেষ বন্ধুদিনে চিরসখা আর চিরসখার চিরসখায় বেড়োনো সেই সব গপ্পোগুলো সবার সাথে ভাগ করার ইচ্ছেটা চেপে রাখতে পারলুম না।
কুমার কত্তা মুখে না বললেও বুঝতে পারি তার প্রবল অস্বস্তি থাকে এই সকল পোস্ট নিয়ে। বুঝতে পারি বলতে চায় এমন লেখা ছোটবেলায় অনেকেরই বেড়োয় তা নিয়ে এসব পাগলামির কোনো মানেই হয় না। কিন্তু আমার কাছে তো ওর অবোধ্য থিসিস পেপার থেকে কচিবেলার গল্প গাথা, সবটাই আমার নিজেরই মনে হয়। আমার জীবনে আর মনের কোণে না পারা, না পাওয়া গুলোর কোটরে ওর পারা আর পাওয়া গুলো খাপে খাপ এঁটে বসে গেছে । তাই নিজের ব্যাপারে যা মন চায় তাই করবো। কুমারের অস্বস্তিকে কেঁচকলা।
Comments
Post a Comment