Skip to main content

বন্ধুবার্ষিকী

তিন বছর আগে গাঁটছড়া বেঁধে প্রিয় বন্ধু "বর" হলো৷ ভাবলাম বেশ মজার ব্যাপার হলো বটে... বরই বন্ধু আবার বন্ধুই বর ...বর কিছু গোলমাল বাধালে বন্ধুকে অভিযোগ করব আর বন্ধু ঝামেলা করলে বরকে নালিশ করব .....কিন্তু গত তিন বছর যা বলল তা অনেকটা এইরকম.....

বরটা এক নম্বরের ভুলো....ঘড়ি..চশমা..গাড়ীর চাবি কোথায় রাখে সবব ভুলে যায়...দোকান থেকে ৫ টা জিনিষ আনতে বললে ২টো অবধারিত ভুলবেই ভুলবে....উফ্ ফ্ ফ্!!! তবে আমার বন্ধুটা বড্ড ভালো ... আমাদের প্রথম দেখা হওয়ার দিন মনে রাখার থেকে হারিয়ে যাওয়া আধার কার্ড, ভোটার কার্ড,প্যান কার্ড আরও সব দরকারি কাগজপত্র সামলে গুছিয়ে রাখা থেকে প্রয়োজনে খুঁজে দেওয়া সবটাই তারই কৃতিত্ব৷
বরটা মোটে surprise দিতে পারে না৷ বলে তুমি বলে দাও কি surprise নেবে ??? কি জ্বালা !!!! বন্ধুটি কিন্তু ঠিক আমার জন্মদিনে মাঝরাতে চুপিচুপি উঠে মাথার পাশে নতুন প্রিয় গল্পের বই আর আর অতি প্রত্যাশিত একটা চিঠি ঠিক রেখে দেয়।

বরটার মনের নানা রকমের চাপের শেষ নেই৷ সেতো মুখফুটে কিছু বলেও না....তার মুখের ভাব দেখে মনের অবস্থা বুঝে নানা ভাবে বুঝিয়ে তার মনের ভার লাঘব করতে হয়৷ কিন্তু আমার মনের ভারের কি?? তার খবর কে রাখে?? ভাগ্যিস বন্ধুটা ছিল ... সে মনে মেঘ জমতে দেখলেই...কখনো কথায় কখনো উরুক্কু যানে চড়িয়ে কখনো ice-cream খাওয়াতে নিয়ে গিয়ে সে মেঘ কাটিয়ে দেয়।

বরটা ঝগড়া করে ... বন্ধু ঝগড়া মেটায়,
বরটা রাগায়....বন্ধু রাগ ভাঙায়,
বরটার কিছু কথায় খুব অভিমান হয় ... বন্ধু মিষ্টি হাসিতে অভিমান কাটিয়ে দেয়।
আরও কত কত কতওও কিছু ...
ভাগ্যিস বন্ধুটা ছিল....নইলে বরটার যে কি হত কে জানে !!!
তাই দীর্ঘজীবি হোক আমাদের বন্ধুত্ব ... শুভ বন্ধুবার্ষিকী প্রিয় বন্ধু



Comments

Popular posts from this blog

একটা চেয়ার আর কিছু গল্পকথা

দোলনা চাপতে কার না ভালো লাগে....আমার তো ছোটবেলা থেকেই দোলনার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ...কিন্তু মুশকিলটা ছিল মানুষটা আমি ছোট থেকেই বেশ মোটাসোটা, ফলত দোলনা চাপলেই আশপাশ থেকে কেউ না কেউ বলে উঠত "এইরে দোলনাটা ভেঙে পড়ল বলে" বা "দোলনাটা হাতিদের চড়ার জন্য নয়" আরও কত কি...খুব কষ্ট হত.... কষ্টে ঝপাং ঝাপ দিয়ে নেমে পড়তাম। তখন কলেজে পড়ি...আমার সবথেকে ভালো বন্ধুর বাড়ির উল্টো দিকে একটা পার্ক ছিল...প্রথম দিনই ওদের বাড়ি যাওয়ার সময় লক্ষ্য করেছিলাম ওই পার্কটিতে দুটো দোলনা আছে এবং যার সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল "২-৫ বছরের শিশুদের জন্য" ... তাতে কি !!! প্রথম ভালোবাসার টানে মানুষ সব অন্যায় করতে পারে ... যেদিন ওদের বাড়ীতে রাত্তিরে থাকতাম ... ৬টার পর পার্ক বন্ধ হয়ে গেলে ... অন্ধকারে ছোট পাঁচিল টপকে আমরা পার্কে ঢুকতাম ... আর মনের আনন্দে আমি দোল খেতাম ... ভাবলাম কি ভালো ... কেউ কিছু বলার নেই বারণ করার নেই ... কোন সময় সীমা নেই যতখুশি যতক্ষণ খুশি দোল খাও। এইভাবে ২-৩ বার সাধ পুরণের পরই ... একদিন পার্কের পাশের বাড়ী থেকে চিৎকার শোনা গেল "কে?? কেএএএ? কারা পার্কে?? প্রায়ই পার্ক বন্ধ হব

পুরনো কাসুন্দি

সালটা ২০০৮, বাবা মারা যাওয়ার কিছু মাস পর, আমার পরম পূজনীয় জননী একটু সামলে উঠতেই, স্থির করলেন এখন থেকে ওনার জীবনে একম-অদ্বিতীয়ম লক্ষ্য হলো আমার বিয়ে দেয়া। ভেবেছিলো আমায় "পার" করেই সব কাজ মিটে যাবে, আমি খাবো বাঁশ এবং তিনি ড্যাং ড্যাং করে বাবার কাছে চলে গিয়ে সুখে - শান্তিতে করবেন স্বর্গবাস। তখনও কুমার বাহাদুরের আগমন ঘটেনি বলাই বাহুল্য। মাকে আমি বুঝিয়ে উঠতে পারতাম না যে, দেখে-শুনে বিয়ের জগতে আমার "দাম " নেই বললেই চলে। বিয়ের খদ্দেরদের ফর্সা, সুন্দরী, স্লিম এবং শিক্ষিত মেয়ে চাই। অনেকের আবার শিক্ষিত হলেও আপত্তি। সুতরাং সে গুড়ে রাশি রাশি বালি। তবুও মার অদম্য ইচ্ছে, শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা এবং ইমোশনাল কাতুকুতুর কাছে হার মেনে "দেখে-শুনে বিয়ে" পুজোর জোগাড়ে নেমে পড়ি। এই পুজোর সর্বপ্রথম নিয়ম, সুন্দর শাড়ি পরে, ভালো করে সাজুগুজু করে একটি ছবি তুলতে হবে।যাতে পাত্রপক্ষ ঝপ করে দেখে টপ করে পছন্দ করে ফেলে। তাই হলো সুন্দর সাজু গুজু এবং শাড়ী পরে ছবি তোলা হলো। এই ছবিটি যে কত জায়গায় ঘুরেছে তার ঠিক নেই। আত্মীয়-পরিজন, ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট, কুরিয়ার অফিস, খবরের কাগজের অফিস, ই-মেল

টিকিটপুরাণ

পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার টিকিট কাটা আর টানটান রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাস পড়া একই ব্যাপার। প্রতি মুহূর্তের উত্তেজনা, এই ফসকে গেল গেল হৃদকম্পে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। আমাদের আজ টিকিট কাটার পর্ব ছিল। নিজেরাই কাটি। দায়িত্ব থাকে কুমার বাহাদুরের ওপর। কাল রাত্তির থেকে যুদ্ধ চলছে। প্রতিবার বেড়াতে যাওয়ার আগে আমাদের whatsapp এ একটা গ্রূপ খুলে ফেলার দায়িত্বে থাকি আমি। যাওয়ার ঠিকানা বদলাতে থাকে , সঙ্গে গ্রূপের নামও। কাল রাত্তির থেকেই আমরা খুব উত্তেজিত, কারণ irctc র সাইট খুলে দেখা গেছে ৪ মাস আগে যে তারিখের টিকিট বুক করা যাচ্ছে, সেটা সেদিনই ওয়েটিং এ চলে যাচ্ছে। তাই একদম ঝপাঝপ কাজ সারতে হবে। নানা রকম আলোচনায় রাত্তির থেকে whtsapp এর গ্রূপ উত্তাল। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত, লক্ষ একটাই,কনফার্ম টিকিট চাই-ই চাই। সবার স্নায়ু টান টান কাল কি হবে, একেবারে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল খেলার মতন। রাতে শুয়েই পড়েছি হঠাৎ whtsapp গ্রূপে অংশুমানের মেসেজ রাত ১২ টার পর টিকিট কাটা যাবে মনে হয়। মেসেজ পড়া মাত্রই কুমার বাহাদুর ঝপ করে উঠে ল্যাপটপ খুলে বসল কিন্তু কোথায় কি !!! আবার অংশুমানের মেসেজ," না ১২ টা