Skip to main content

শুভ ঝগড়া দিবস

মানুষের ঝগড়া নানা কারণে হতে পারে .... কিন্তু একটা বেজি.... একটা বেজির কারণে ঝগড়া কি সম্ভব???? হ্যাঁ , একটা বেজিকে নিয়েই..... আমার ২৫০ বছরের পুরোন নতুনবাড়ীতে ও নতুনবাড়ীর বাগানে মানুষের সাথেই সহাবস্থান করে বেজি , ভাম ,গন্ধগকুল , সাপ ইত্যাদি ইত্যাদি৷ তারা তাদের সংসারে নিজেদের মতন থাকে আমাদের বিরক্ত করে না ৷মাঝে মধ্যে শুধু বেজিদের দৌড় ঝাঁপ চোখে পড়ে ৷আর এদের দেখতে পেলেই এদের চেয়ে ১০ গুন আকারে বড় আমি ভয়ে যা চিৎকার করি তা শুনে ওদের পাশাপাশি বাড়ীর লোকজনেরও পিলে চমকে যাবার জোগাড় হয় ৷ আজ এই এক বেজিই আমাদের শোবার ঘরে ঢোকার তাল করছিল..এই নিয়েই বড়সড় সিরিয়াস ঝগড়া হয়ে গেল কত্তার সাথে৷

সেতো হুকো মুখ নিয়ে নিজের কর্মস্থল চলে গেল .... আমার মাথাটা একইসাথে ক্লক ওয়াইস এবং anti- ক্লক ওয়াইস ঘুরে চলায় , আগে থেকেই ইস্কুল যাব না বলেই ঠিক করেছিলাম৷ ঝগড়ার রেশ না কাটায়...মাথার মধ্যে ঝগড়ায় নিজের সমর্থনে বেশকিছু যুক্তি দিয়ে আমি কতটা ঠিক আর বর কতটা ভুল সেই বিচার করছি ....

হঠাৎ মন বলে উঠল, " খুবতো বরকে দোষ দেওয়া হচ্ছে.... এই যে কাল একসাথে ফেরার সময় মোমো খাওয়াল তার বেলা?? "
মাথা রেগে বলল, " থাপার মোমো ছাড়া অন্য কোন মোমো আমার মোটেই ভালো লাগে না ....কাল তো অন্য কোন একটা দোকানের খাওয়াল....একদম বাজে"
মন বলল , " এই যে পরশু রাত্তিরে ভাম দেখে ভয়ে আত্মারাম খাঁচা হবার জোগাড়....তাকে তাড়াল কে??"
মাথা বলল, " হুহ্ঃ...ওটা আবার তাড়ানোর কি ছিল....ওটা তো নিজেই চলে গেল "
মন বলল " বটে !!! আচ্ছা তবে এই যখন পা মুচকে গেল তখন রোজ কে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে স্কুল পৌছে দিয়ে অাসত??"
মাথা একটু ভেবে বলল " না মানে .... হ্যাঁ....মানে না...সে তো যাবেই...ওর জন্যই তো মুচকেছিল!!"
মন ধমক দিয়ে বলে , " এই যে যখনই ঝগড়া হয়...নিজের ভুল থাকুক বা না থাকুক তবুও "আচ্ছা ছরি" বলে কে সব মিটমাট করে নেয়? "
মাথা একটু নরম হয়ে আমতা আমতা করে বলল, " তা যে ভুল করে সেই তো মেটাবে .."
মন হেসে বলল : " ভালোরাখার জন্য ছোট ছোট ইচ্ছেপুরণ ঘটায় কে ? "
মাথা ঠান্ডা হয়ে হেসে বলল " সেএএএ.. সেএএএ.. সেএএএ "

মন আর মাথার মিটমাট হতেই ফোনটা বেজে উঠল .... ফোন ধরতেই একটা নরম গলা বলে উঠল " ফিরতে আজ দেরী হবে , মোমো নিয়ে যাব....থাপার দোকান খুলতে খুলতে ৫.৩০ টা...৬ টা হয়ে যাবে ফিরতে "

Comments

Popular posts from this blog

একটা চেয়ার আর কিছু গল্পকথা

দোলনা চাপতে কার না ভালো লাগে....আমার তো ছোটবেলা থেকেই দোলনার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ...কিন্তু মুশকিলটা ছিল মানুষটা আমি ছোট থেকেই বেশ মোটাসোটা, ফলত দোলনা চাপলেই আশপাশ থেকে কেউ না কেউ বলে উঠত "এইরে দোলনাটা ভেঙে পড়ল বলে" বা "দোলনাটা হাতিদের চড়ার জন্য নয়" আরও কত কি...খুব কষ্ট হত.... কষ্টে ঝপাং ঝাপ দিয়ে নেমে পড়তাম। তখন কলেজে পড়ি...আমার সবথেকে ভালো বন্ধুর বাড়ির উল্টো দিকে একটা পার্ক ছিল...প্রথম দিনই ওদের বাড়ি যাওয়ার সময় লক্ষ্য করেছিলাম ওই পার্কটিতে দুটো দোলনা আছে এবং যার সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল "২-৫ বছরের শিশুদের জন্য" ... তাতে কি !!! প্রথম ভালোবাসার টানে মানুষ সব অন্যায় করতে পারে ... যেদিন ওদের বাড়ীতে রাত্তিরে থাকতাম ... ৬টার পর পার্ক বন্ধ হয়ে গেলে ... অন্ধকারে ছোট পাঁচিল টপকে আমরা পার্কে ঢুকতাম ... আর মনের আনন্দে আমি দোল খেতাম ... ভাবলাম কি ভালো ... কেউ কিছু বলার নেই বারণ করার নেই ... কোন সময় সীমা নেই যতখুশি যতক্ষণ খুশি দোল খাও। এইভাবে ২-৩ বার সাধ পুরণের পরই ... একদিন পার্কের পাশের বাড়ী থেকে চিৎকার শোনা গেল "কে?? কেএএএ? কারা পার্কে?? প্রায়ই পার্ক বন্ধ হব...

চিরসখা "সন্দেশ"

কাল সন্ধ্যেয় নানা রকম গপ্পের মধ্যে কথায় কথায় "সন্দেশ" এর কথা উঠলো। কুমার বাহাদুরের জীবনে দুরকম সন্দেশই কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মোটামুটি ওর কাছের লোকজন সবাই জানে। এক সন্দেশে তার উদরতৃপ্তি ঘটে আরেক "সন্দেশ" তার মনের আরামের খোরাক। সেই ৯৫ সালে মেজপিসি "সন্দেশ" পত্রিকার গ্রাহক করে দিয়েছিলো। তারপর থেকেই কুমারের অন্তরতম সঙ্গী হয়ে ওঠে "সন্দেশ"। গত ২৫ বছরের সন্দেশের সব সংখ্যাই আছে বোধকরি ওর সংগ্রহে আছে। এখনো অন্যান্য যেকোনো পুজোসংখ্যার আগে "সন্দেশ" কবে বেড়োচ্ছে সে খবর জোগাড়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ থাকে। আমায় আগেও বলেছিলো, কাল যখন "সন্দেশ" এর কথা উঠলো, হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। জিগালুম,  সন্দেশে তোমার একবার লেখা বেড়িয়েছিলো না??? হ্যাঁ, হাত পাকাবার আসরে। তোমার কাছে আছে সেই সংখ্যাগুলো?? থাকবে না কেন!! বের করোতো। এমনিতে তো ভুলোরাম, কোথায় কি রাখে দুমিনিট অন্তর ভুলে যায়, কিন্তু নিজের আজীবন দোসরদের খুঁজে পেতে তার বিন্দুমাত্র দেরী হয় না। বলতে না বলতে নিয়ে চলে এলো। ৪ টে গল্প বেড়িয়েছিলো, একটা গল্পের সাথে একটা ছবিও ছিল কিন্তু সেটা কোনো কা...

ডুয়ার্স সফরনামা: প্রথম দিনের কাহন

গতবছর উড়িষ্যা ট্রিপে বসেই ঠিক হয়েছিল এবছরের ডেস্টিনেশন ডুয়ার্স। প্রস্তাবটা অনির্বানই দিয়েছিলো। চল এবার ডুয়ার্স যাই, বক্সা-লেপচাখা-জয়ন্তী আর ফেরার পথে কোনো একটা জঙ্গল। প্রস্তুতি শুরু হলো সেই মতন। প্রতিবারই যা হয় - কটা টিকিট কাটা হবে সেই নিয়ে টানাপোড়েন। এই চার মাস আগে টিকিট কাটার গপ্পোটা বড্ড ঝামেলার। তাই মোটামুটি গড়ে হিসেব করে ৯ টা টিকিট কাটা হলো। উত্তরবঙ্গে যাওয়া পাকা ।টিকিট কাটার ঝঞ্ঝাট নিয়ে আমি গপ্পো ফেঁদে বসলাম। (দ্রঃ  টিকিটপুরাণ ) ফেরার টিকিটের দিনই হলো ঝামেলা। কাঞ্চনকন্যায় ওয়েটিং হয়ে গেলো। কুমার কত্তার সব কাজ একদম যথাযথ হওয়া চাই, তাই কনফার্ম হয়ে যাবে এই আশা রেখেও পরের দিনে কাঞ্চনজঙ্ঘায় কনফার্ম টিকিট কেটে রাখলো। মাসবদলের সাথে সাথে আমাদের যাওয়ার সদস্য সংখ্যাও পাল্টাতে থাকে। কখনো ৯ থেকে ৭ কখনো বা ৫ আবার কখনো ৬। দীপঙ্কর দা মানে যিনি আমাদের ডুয়ার্সের দিনযাপনের ব্যবস্থাপনার সম্পূর্ন দায়িত্বে ছিলেন তারও মাথা খেতে থাকি। কখনও বলি ৯ জন যাচ্ছি না ৭ জন, কখনও বলি  ৫ জন কনফার্মই কনফার্ম; আবার যাওয়ার একমাস আগে বলি, একটু ম্যানেজ করে  ৮ জনের ব্যবস্থা করে দাও। কিভাবে যে উনি সবটা অ্যা...