Skip to main content

একটি দাম্পত্য কলহের সূত্রপাত

বিয়ে করে আসার পর থেকে এই ঘরটাতেই আছি৷ আমাদের ঘরটা আমার ভীষণ ভীষণ মনের মতন৷ এই ঘরটায় আমাদের থাকতে দেওয়ার জন্য আমি ওনাদের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ৷ হ্যাঁ, ওনারা মানে এই ঘরের আদি বাসিন্দা যারা, মশা মহোদয়বৃন্দ৷

শুধু মুশকিল একটাই ওনারা সংখ্যায় কয়েক শো৷ ফলত আমাদের privacy র একটু সমস্যা হয়েই যায়৷ এই যেমন গতকাল রাত্তিরে, ওনারা দুই - তিন জন মশারির মধ্যে ঢুকে পড়েন৷ আমি মন দিয়ে whtsapp এ বন্ধুদের সাথে মশগুল আর কুমার বাহাদুর আমার সতীনে থুড়ি গল্পবইতে ডুবে, তখনই ওনারা আমাদের কানের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশন করতে শুরু করলেন৷ আমিতো কৃতজ্ঞতার দায়ে আবদ্ধ, তাই ignore করলাম৷ কিন্তু আমার কত্তা বাবু লম্ফঝম্ফ শুরু করে দিলেন৷ সে তো মশারির মধ্যে মশা দেখলে এতই বিচলিত হয়ে ওঠে যেন মশা না ওর দিকে মৌমাছি বা ভীমরুল ধেয়ে আসছে৷ যাগগে .... একবার তাকিয়ে দেখলুম দুটোকে চিরনিদ্রায় পাঠিয়ে দিয়ে তিন নম্বরটাকে গোল গোল চোখ করে ঘাড় এদিক ওদিক ওপর নীচ ঘুরিয়ে খুজে চলেছে৷ ওর মুখের ঐ ভাবভঙ্গি দেখে আমি ভাবলুম তৃতীয়টাকে মারার বিজয় মুহুর্তটা ক্যামেরা বন্দী না করলেই নয় ৷ ফোনে ক্যামেরার বোতাম টা অন করে দেখি কুমার বাহাদুর তার তৃতীয় target খুজে পেয়ে ধীরে ধীরে মশারির ডান কোণের দিকে হাঁটু মুড়ে এগিয়ে চলেছে .... এই ঐতিহাসিক মুহুর্তকে capture করতে পারছি ভেবে আমিও শিহরিত, উচ্ছসিত .... কুমার বাহাদুর মশার এক্কেবারে কাছে পৌছে গেছে .... এই হাত দুটো চড় মারার ভঙ্গিমায় ওপরে তুললো ..। আমিও দিলাম click বোতাম টিপে.... ব্যস্ স্ স্ স্

camera র flash light এ মশা গেল উড়ে ... মাঝরাতে জোড়দার দাম্পত্য কলহ গেল জুড়ে৷

Comments

Popular posts from this blog

একটা চেয়ার আর কিছু গল্পকথা

দোলনা চাপতে কার না ভালো লাগে....আমার তো ছোটবেলা থেকেই দোলনার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ...কিন্তু মুশকিলটা ছিল মানুষটা আমি ছোট থেকেই বেশ মোটাসোটা, ফলত দোলনা চাপলেই আশপাশ থেকে কেউ না কেউ বলে উঠত "এইরে দোলনাটা ভেঙে পড়ল বলে" বা "দোলনাটা হাতিদের চড়ার জন্য নয়" আরও কত কি...খুব কষ্ট হত.... কষ্টে ঝপাং ঝাপ দিয়ে নেমে পড়তাম। তখন কলেজে পড়ি...আমার সবথেকে ভালো বন্ধুর বাড়ির উল্টো দিকে একটা পার্ক ছিল...প্রথম দিনই ওদের বাড়ি যাওয়ার সময় লক্ষ্য করেছিলাম ওই পার্কটিতে দুটো দোলনা আছে এবং যার সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল "২-৫ বছরের শিশুদের জন্য" ... তাতে কি !!! প্রথম ভালোবাসার টানে মানুষ সব অন্যায় করতে পারে ... যেদিন ওদের বাড়ীতে রাত্তিরে থাকতাম ... ৬টার পর পার্ক বন্ধ হয়ে গেলে ... অন্ধকারে ছোট পাঁচিল টপকে আমরা পার্কে ঢুকতাম ... আর মনের আনন্দে আমি দোল খেতাম ... ভাবলাম কি ভালো ... কেউ কিছু বলার নেই বারণ করার নেই ... কোন সময় সীমা নেই যতখুশি যতক্ষণ খুশি দোল খাও। এইভাবে ২-৩ বার সাধ পুরণের পরই ... একদিন পার্কের পাশের বাড়ী থেকে চিৎকার শোনা গেল "কে?? কেএএএ? কারা পার্কে?? প্রায়ই পার্ক বন্ধ হব...

চিরসখা "সন্দেশ"

কাল সন্ধ্যেয় নানা রকম গপ্পের মধ্যে কথায় কথায় "সন্দেশ" এর কথা উঠলো। কুমার বাহাদুরের জীবনে দুরকম সন্দেশই কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মোটামুটি ওর কাছের লোকজন সবাই জানে। এক সন্দেশে তার উদরতৃপ্তি ঘটে আরেক "সন্দেশ" তার মনের আরামের খোরাক। সেই ৯৫ সালে মেজপিসি "সন্দেশ" পত্রিকার গ্রাহক করে দিয়েছিলো। তারপর থেকেই কুমারের অন্তরতম সঙ্গী হয়ে ওঠে "সন্দেশ"। গত ২৫ বছরের সন্দেশের সব সংখ্যাই আছে বোধকরি ওর সংগ্রহে আছে। এখনো অন্যান্য যেকোনো পুজোসংখ্যার আগে "সন্দেশ" কবে বেড়োচ্ছে সে খবর জোগাড়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ থাকে। আমায় আগেও বলেছিলো, কাল যখন "সন্দেশ" এর কথা উঠলো, হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। জিগালুম,  সন্দেশে তোমার একবার লেখা বেড়িয়েছিলো না??? হ্যাঁ, হাত পাকাবার আসরে। তোমার কাছে আছে সেই সংখ্যাগুলো?? থাকবে না কেন!! বের করোতো। এমনিতে তো ভুলোরাম, কোথায় কি রাখে দুমিনিট অন্তর ভুলে যায়, কিন্তু নিজের আজীবন দোসরদের খুঁজে পেতে তার বিন্দুমাত্র দেরী হয় না। বলতে না বলতে নিয়ে চলে এলো। ৪ টে গল্প বেড়িয়েছিলো, একটা গল্পের সাথে একটা ছবিও ছিল কিন্তু সেটা কোনো কা...

কন্যের কেশ কথন

ছোটবেলা থেকেই আমার লম্বা ঘন চুল ছিল। খুব ভালো লাগতো আমার। মা মাঝে মধ্যে গজগজ করতো। তার কারণও ছিল অবশ্য। সকালে স্কুলে বেড়োতাম ৮.৩০ টায়। ভোর বেলা উঠে কাজ গুছিয়ে, রান্না করে, আমার টিফিন তৈরি করে তারপর বসতে হত মাকে আমার চুল বাঁধতে। স্কুলের নিয়ম ছিল বড় চুল মানেই দুটো বিনুনি বেঁধে যেতে হবে। প্রায়ই বলত,"উফ তোর চুল বাঁধতে আমার হাত ব্যথা হয়ে যায়, দেব ছোট করে এবার।" আমার সাপোর্টে সবসময় ছিল বড়মা। বলত চিন্তা করিস না; তোর মা অমন বলছে, আমি কাটতে দেবই না তোর চুল। আর তাছাড়া আমিও জানতাম মার ওসব কথার কথা। একটু বড় হতে মজা করে যদি বলতাম ভাবছি চুলটা কেটেই দেবো, ওমনি বড়বড় চোখ পাকিয়ে বলতো, "খবরদার, একদম নয়।" সেই থেকে লম্বা ঘন একঢাল চুল। খুব ভালো লাগতো আমার। দেখতে শুনতে কোনদিনই তেমন ছিলাম না। কিন্তু আমার চুল দেখেই নিজেরই মন ভরে যেত। স্কুল থেকে ফিরলে সন্ধ্যে বেলায় মা কালো কার দিয়ে বেড়া বিনুনি বেঁধে দিত। কি যে অদ্ভুত দেখতে লাগতো তারপর কি বলবো। রাত্তির বেলায় চিত হয়ে শুতেই পারতুম না, ঘাড়ে ব্যথা হয়ে যেত, পাশ ফিরে শুতে হতো ।  বাবা মারা যাওয়ার পর, নিয়ম-কানুন মেটার ১৩ দিন পর যখন চুল ...