Skip to main content

ছোট্ট পত্রিকা

আমরা দুজন যেহেতু একদম সমবয়সী আমাদের ফেলে আসা বছরগুলোর ইতিবৃত্তগুলো কোথাও মিলেমিশে যায় আবার কোথাও আবার একদমই উল্টোদিকে বয় ৷ 
আলাপ... বন্ধুত্ব ... ভালোলাগা.... ভালোবাসার তখন ঢের দেরি ৷ আমি যখন কন্ভেন্ট স্কুলের নিয়ম , পরীক্ষা , পড়াশুনোর জালে বাঁধা ৷ ফাঁক পেলে সুকুমার সমগ্র , শিবরামের জগতে একটু ঘোরাঘুরি , পাড়ার বন্ধুদের সাথে ক্রীকেট খেলা আর মা'র চোখ এড়িয়ে দাদা যখন চিত্রহার দেখে তথন দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গের শাহরুখ - কাজলের এক ঝলকে মুগ্ধ হওয়া ৷ তখন কুমার বাহাদুরের জীবনে একদম অন্য খাতে ৷ পড়াশুনার ফাঁক-ফোকরে তার সঙ্গি শঙ্কর , টেনিদা , ফেলুদা ৷ এক লোডসেডিং এর সন্ধ্যেতে দাদার সাথে আড্ডা দিতে দিতে হঠাৎ ঠিক করে ফেলা বাবাদের মতন একটা হাতে লেখা পত্রিকা বের করার ৷ নিজের , স্কুলের বন্ধুদের , দাদা , দিদি , জেঠু , দিদা , পিসিদের লেখা নিয়ে তৈরি করে ফেলে এমন একটা হাতে লেখা পত্রিকা যার সাহিত্য জগতে কোন দাম না থাকলেও স্মৃতিররাজ্যে তা অমূল্য, নাম , "ছোট্ট পত্রিকা " ৷ ঐ বয়সের মিষ্টি মিষ্টি লেখা ৷ যেগুলো এখন পড়ে বেশ হাসিই পায় , হাসেও , জোর করে হাত থেকে টেনে নিয়ে বলে "না না এটা পড়ো না " , আমি পড়েই ছাড়ি , ওর মুখে অদ্ভুত একটা ভালোলাগা, নষ্টালজিয়া মাখানো হাসি দেখে মনটা আমার মিষ্টি হয়ে যায় ৷ 
ইসসস্ কেন যে আলাপটা ২৫ বছরে হলো !!!!! আর ১০-১৫ বছর আগে হলে আমারও একটা - আধটা কচি হাতের বোকা - সোকা লেখা হয়ত ঠাঁই পেতে পারত "ছোট্ট পত্রিকায়" ৷ আর এই নষ্টালজিয়ার হাসিটা একসাথে হাসতে পারার আনন্দটাও অন্যরকম হতো একদম।

Comments

Popular posts from this blog

একটা চেয়ার আর কিছু গল্পকথা

দোলনা চাপতে কার না ভালো লাগে....আমার তো ছোটবেলা থেকেই দোলনার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ...কিন্তু মুশকিলটা ছিল মানুষটা আমি ছোট থেকেই বেশ মোটাসোটা, ফলত দোলনা চাপলেই আশপাশ থেকে কেউ না কেউ বলে উঠত "এইরে দোলনাটা ভেঙে পড়ল বলে" বা "দোলনাটা হাতিদের চড়ার জন্য নয়" আরও কত কি...খুব কষ্ট হত.... কষ্টে ঝপাং ঝাপ দিয়ে নেমে পড়তাম। তখন কলেজে পড়ি...আমার সবথেকে ভালো বন্ধুর বাড়ির উল্টো দিকে একটা পার্ক ছিল...প্রথম দিনই ওদের বাড়ি যাওয়ার সময় লক্ষ্য করেছিলাম ওই পার্কটিতে দুটো দোলনা আছে এবং যার সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল "২-৫ বছরের শিশুদের জন্য" ... তাতে কি !!! প্রথম ভালোবাসার টানে মানুষ সব অন্যায় করতে পারে ... যেদিন ওদের বাড়ীতে রাত্তিরে থাকতাম ... ৬টার পর পার্ক বন্ধ হয়ে গেলে ... অন্ধকারে ছোট পাঁচিল টপকে আমরা পার্কে ঢুকতাম ... আর মনের আনন্দে আমি দোল খেতাম ... ভাবলাম কি ভালো ... কেউ কিছু বলার নেই বারণ করার নেই ... কোন সময় সীমা নেই যতখুশি যতক্ষণ খুশি দোল খাও। এইভাবে ২-৩ বার সাধ পুরণের পরই ... একদিন পার্কের পাশের বাড়ী থেকে চিৎকার শোনা গেল "কে?? কেএএএ? কারা পার্কে?? প্রায়ই পার্ক বন্ধ হব

পুরনো কাসুন্দি

সালটা ২০০৮, বাবা মারা যাওয়ার কিছু মাস পর, আমার পরম পূজনীয় জননী একটু সামলে উঠতেই, স্থির করলেন এখন থেকে ওনার জীবনে একম-অদ্বিতীয়ম লক্ষ্য হলো আমার বিয়ে দেয়া। ভেবেছিলো আমায় "পার" করেই সব কাজ মিটে যাবে, আমি খাবো বাঁশ এবং তিনি ড্যাং ড্যাং করে বাবার কাছে চলে গিয়ে সুখে - শান্তিতে করবেন স্বর্গবাস। তখনও কুমার বাহাদুরের আগমন ঘটেনি বলাই বাহুল্য। মাকে আমি বুঝিয়ে উঠতে পারতাম না যে, দেখে-শুনে বিয়ের জগতে আমার "দাম " নেই বললেই চলে। বিয়ের খদ্দেরদের ফর্সা, সুন্দরী, স্লিম এবং শিক্ষিত মেয়ে চাই। অনেকের আবার শিক্ষিত হলেও আপত্তি। সুতরাং সে গুড়ে রাশি রাশি বালি। তবুও মার অদম্য ইচ্ছে, শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা এবং ইমোশনাল কাতুকুতুর কাছে হার মেনে "দেখে-শুনে বিয়ে" পুজোর জোগাড়ে নেমে পড়ি। এই পুজোর সর্বপ্রথম নিয়ম, সুন্দর শাড়ি পরে, ভালো করে সাজুগুজু করে একটি ছবি তুলতে হবে।যাতে পাত্রপক্ষ ঝপ করে দেখে টপ করে পছন্দ করে ফেলে। তাই হলো সুন্দর সাজু গুজু এবং শাড়ী পরে ছবি তোলা হলো। এই ছবিটি যে কত জায়গায় ঘুরেছে তার ঠিক নেই। আত্মীয়-পরিজন, ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট, কুরিয়ার অফিস, খবরের কাগজের অফিস, ই-মেল

টিকিটপুরাণ

পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার টিকিট কাটা আর টানটান রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাস পড়া একই ব্যাপার। প্রতি মুহূর্তের উত্তেজনা, এই ফসকে গেল গেল হৃদকম্পে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। আমাদের আজ টিকিট কাটার পর্ব ছিল। নিজেরাই কাটি। দায়িত্ব থাকে কুমার বাহাদুরের ওপর। কাল রাত্তির থেকে যুদ্ধ চলছে। প্রতিবার বেড়াতে যাওয়ার আগে আমাদের whatsapp এ একটা গ্রূপ খুলে ফেলার দায়িত্বে থাকি আমি। যাওয়ার ঠিকানা বদলাতে থাকে , সঙ্গে গ্রূপের নামও। কাল রাত্তির থেকেই আমরা খুব উত্তেজিত, কারণ irctc র সাইট খুলে দেখা গেছে ৪ মাস আগে যে তারিখের টিকিট বুক করা যাচ্ছে, সেটা সেদিনই ওয়েটিং এ চলে যাচ্ছে। তাই একদম ঝপাঝপ কাজ সারতে হবে। নানা রকম আলোচনায় রাত্তির থেকে whtsapp এর গ্রূপ উত্তাল। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত, লক্ষ একটাই,কনফার্ম টিকিট চাই-ই চাই। সবার স্নায়ু টান টান কাল কি হবে, একেবারে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল খেলার মতন। রাতে শুয়েই পড়েছি হঠাৎ whtsapp গ্রূপে অংশুমানের মেসেজ রাত ১২ টার পর টিকিট কাটা যাবে মনে হয়। মেসেজ পড়া মাত্রই কুমার বাহাদুর ঝপ করে উঠে ল্যাপটপ খুলে বসল কিন্তু কোথায় কি !!! আবার অংশুমানের মেসেজ," না ১২ টা