Skip to main content

রোজনামচা

একটি মানুষের curiosity লেবেল কতটা হতে পারে??!!! এতটাই যে সে একমিনিটে অন্তত ১৪-১৫ বার "বলো" বলতে পারে ৷
আজ সন্ধ্যে বেলায় একটা ফোন এসেছিল আমার, কোন নাম ওঠেনি একটা অপরিচিত নাম্বার ৷ যাইহোক ফোনটা ধরতে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু বুঁচির গলা ভেসে এল ,
" ফাঁকা আছিস ??"
"হ্যাঁ , কেন ?? "
"অনলাইন আয় , কথা বলতে পারব না , দরকার আছে "
"আচ্ছা , আসছি ৷"
কুমার বাহাদুরের একতরফা কথা শুনে জানবার ইচ্ছে জেগেছিল কার সাথে কথা হচ্ছিল ৷ বলল ,
"কে গো?"
আমার মাথায় বদবুদ্ধি চাপল , জানি কি বললে ওর curiosity লেবেলটা বাড়বে ৷ আর যতক্ষণ না সেটা জানতে পারবে হোলসেল রেটে অক্লান্ত ভাবে ও " বলো" বলে যাবে , তাই আমি উত্তর দিলাম ,
"বয়ফ্রেন্ড"
"আহ্ !! বলো না কে ফোন করেছিল ?? "
"বললাম তো বয়ফ্রেন্ড , জিগেস করল বর বাড়ী আছে , বললাম হ্যাঁ , কেন ? বলল অনলাইন এস "
"আরে বাবা বাজে কথা বাদ দাও , বলো না কে করেছিল , বলো বলো , কি হলো বলো , বলোনা , বলোনা !!! বলো, বলো??"
"আরে বললাম তো , তুমি বিশ্বাস না করলে কী করব????"
"না ,বলো না , কেন এরকম করছো , বলো , বলো , বলো , তুমি বলো , কি হলো বলো , বলো না , কেন বলছো না, বলো?"
"বললাম তো!!!"
"না তুমি ইয়ার্কি করছো ,বলো , বলো , কি হলো বলো , কি গো বলো?? আচ্ছা ঠিক আছে যাও বলতে হবে না !!"
"আহ্ !! বাঁচলুম বাবা ৷ "
"তুমি কিন্তু এটা আমার সাথে ঠিক করছো না , অন্যায় করছো , বলতে বলছি বলছ না , এটা খুউব খারাপ হচ্ছে , বলেই দাও না , বলেলেই মিটে যাবে , কি হলো বলো , বলো , বলো...
আমরা দুজনেই হাসতে হাসতে নিজেদেরই পেটে খিল ধরিয়ে এটা চালিয়ে যাই ৷ এই ছোটখাট বোকাসোকা মুহুর্ত গুলোই আমাদের stress buster ৷ জীবনে সবার মতন আমাদেরও সমস্যার জাল নানাদিকে ছড়ানো , তাকে গোটাতে চাইলেও গোটাতে পারা যায় না ৷ তাই এই মিঠে মারামারি , খুটিনাটির খুনসুটি , ঝুটো ঝগড়া , হাহা হাসিটার জীবনে খুব প্রয়োজন ৷ কারণে হেসে , অকারণে হেসে , বুঝে হেসে , না-বুঝে হেসে , আস্তে হেসে , জোরে হেসে , চোখের জলটা টুক করে মুছে হেসে নিজেদের মনকে একটু আরাম দিই ভাবনা - চিন্তির তাপ উত্তাপ থেকে ৷ মনও আরাম পেয়ে জানান দেয় , ভালো আছি ৷ 
by the way শেষমেশ জেনেই ছাড়লো আসলে কে ফোন করেছিল ৷ আমার কান মাথা খেয়ে যখন লাভ হয় না , মোক্ষম অস্ত্র কাজে লাগায় , কাতুকুতু ৷ বাধ্য হয়ে পেট থেকে সব বেড়িয়ে পড়ে ৷ 

Comments

Popular posts from this blog

একটা চেয়ার আর কিছু গল্পকথা

দোলনা চাপতে কার না ভালো লাগে....আমার তো ছোটবেলা থেকেই দোলনার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ...কিন্তু মুশকিলটা ছিল মানুষটা আমি ছোট থেকেই বেশ মোটাসোটা, ফলত দোলনা চাপলেই আশপাশ থেকে কেউ না কেউ বলে উঠত "এইরে দোলনাটা ভেঙে পড়ল বলে" বা "দোলনাটা হাতিদের চড়ার জন্য নয়" আরও কত কি...খুব কষ্ট হত.... কষ্টে ঝপাং ঝাপ দিয়ে নেমে পড়তাম। তখন কলেজে পড়ি...আমার সবথেকে ভালো বন্ধুর বাড়ির উল্টো দিকে একটা পার্ক ছিল...প্রথম দিনই ওদের বাড়ি যাওয়ার সময় লক্ষ্য করেছিলাম ওই পার্কটিতে দুটো দোলনা আছে এবং যার সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল "২-৫ বছরের শিশুদের জন্য" ... তাতে কি !!! প্রথম ভালোবাসার টানে মানুষ সব অন্যায় করতে পারে ... যেদিন ওদের বাড়ীতে রাত্তিরে থাকতাম ... ৬টার পর পার্ক বন্ধ হয়ে গেলে ... অন্ধকারে ছোট পাঁচিল টপকে আমরা পার্কে ঢুকতাম ... আর মনের আনন্দে আমি দোল খেতাম ... ভাবলাম কি ভালো ... কেউ কিছু বলার নেই বারণ করার নেই ... কোন সময় সীমা নেই যতখুশি যতক্ষণ খুশি দোল খাও। এইভাবে ২-৩ বার সাধ পুরণের পরই ... একদিন পার্কের পাশের বাড়ী থেকে চিৎকার শোনা গেল "কে?? কেএএএ? কারা পার্কে?? প্রায়ই পার্ক বন্ধ হব...

চিরসখা "সন্দেশ"

কাল সন্ধ্যেয় নানা রকম গপ্পের মধ্যে কথায় কথায় "সন্দেশ" এর কথা উঠলো। কুমার বাহাদুরের জীবনে দুরকম সন্দেশই কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মোটামুটি ওর কাছের লোকজন সবাই জানে। এক সন্দেশে তার উদরতৃপ্তি ঘটে আরেক "সন্দেশ" তার মনের আরামের খোরাক। সেই ৯৫ সালে মেজপিসি "সন্দেশ" পত্রিকার গ্রাহক করে দিয়েছিলো। তারপর থেকেই কুমারের অন্তরতম সঙ্গী হয়ে ওঠে "সন্দেশ"। গত ২৫ বছরের সন্দেশের সব সংখ্যাই আছে বোধকরি ওর সংগ্রহে আছে। এখনো অন্যান্য যেকোনো পুজোসংখ্যার আগে "সন্দেশ" কবে বেড়োচ্ছে সে খবর জোগাড়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ থাকে। আমায় আগেও বলেছিলো, কাল যখন "সন্দেশ" এর কথা উঠলো, হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। জিগালুম,  সন্দেশে তোমার একবার লেখা বেড়িয়েছিলো না??? হ্যাঁ, হাত পাকাবার আসরে। তোমার কাছে আছে সেই সংখ্যাগুলো?? থাকবে না কেন!! বের করোতো। এমনিতে তো ভুলোরাম, কোথায় কি রাখে দুমিনিট অন্তর ভুলে যায়, কিন্তু নিজের আজীবন দোসরদের খুঁজে পেতে তার বিন্দুমাত্র দেরী হয় না। বলতে না বলতে নিয়ে চলে এলো। ৪ টে গল্প বেড়িয়েছিলো, একটা গল্পের সাথে একটা ছবিও ছিল কিন্তু সেটা কোনো কা...

কন্যের কেশ কথন

ছোটবেলা থেকেই আমার লম্বা ঘন চুল ছিল। খুব ভালো লাগতো আমার। মা মাঝে মধ্যে গজগজ করতো। তার কারণও ছিল অবশ্য। সকালে স্কুলে বেড়োতাম ৮.৩০ টায়। ভোর বেলা উঠে কাজ গুছিয়ে, রান্না করে, আমার টিফিন তৈরি করে তারপর বসতে হত মাকে আমার চুল বাঁধতে। স্কুলের নিয়ম ছিল বড় চুল মানেই দুটো বিনুনি বেঁধে যেতে হবে। প্রায়ই বলত,"উফ তোর চুল বাঁধতে আমার হাত ব্যথা হয়ে যায়, দেব ছোট করে এবার।" আমার সাপোর্টে সবসময় ছিল বড়মা। বলত চিন্তা করিস না; তোর মা অমন বলছে, আমি কাটতে দেবই না তোর চুল। আর তাছাড়া আমিও জানতাম মার ওসব কথার কথা। একটু বড় হতে মজা করে যদি বলতাম ভাবছি চুলটা কেটেই দেবো, ওমনি বড়বড় চোখ পাকিয়ে বলতো, "খবরদার, একদম নয়।" সেই থেকে লম্বা ঘন একঢাল চুল। খুব ভালো লাগতো আমার। দেখতে শুনতে কোনদিনই তেমন ছিলাম না। কিন্তু আমার চুল দেখেই নিজেরই মন ভরে যেত। স্কুল থেকে ফিরলে সন্ধ্যে বেলায় মা কালো কার দিয়ে বেড়া বিনুনি বেঁধে দিত। কি যে অদ্ভুত দেখতে লাগতো তারপর কি বলবো। রাত্তির বেলায় চিত হয়ে শুতেই পারতুম না, ঘাড়ে ব্যথা হয়ে যেত, পাশ ফিরে শুতে হতো ।  বাবা মারা যাওয়ার পর, নিয়ম-কানুন মেটার ১৩ দিন পর যখন চুল ...