Skip to main content

সন্দেশ shake

স্কুল - কলেজ থেকে একসাথে ফেরার সময় আমাদের প্রিয় মোমোর দোকানে সবে মোমো খাওয়া শেষ হয়েছে ,বলে.. চলো, সোডা খাই....আমার তখন মোমো আর সুপে পেট আই-ঢাই ..... বললুমঃ
"অসম্ভব! তুমি খেলে খাও আমি নেই৷"
"নাহ্ তাহলে খাবো না থাক ... "
"আরে কেন? তুমি খাও না, তাছাড়া আমি দুবার চা খেয়েছি, আর কোন লিকুইড জিনিষের জন্য পেটে জায়গা নাই৷"
"নাহ্ থাক ছেড়ে দাও, অন্য কোনদিন খাব...."
"উফফ! কি জ্বালা, আচ্ছা চলো, খাচ্ছি৷"
"না না থাক, তোমার পেটে তো জায়গা নেই, ছেড়ে দাও ... "
এই কথোপকথনে যদি আমি দাঁড়ি না টানি, repeat mode চলতেই থাকবে জানি৷ তাই আর কিছু না বলে আমিও বললুম আচ্ছা ঠিক আছে অন্য দিন হবে৷ ফেরার পর স্বাভাবিক ভাবেই রাত্তিরের রান্নার কাজকর্মে ব্যস্ত আমি, হঠাৎ দেখি মুখ ভার করে রান্নাঘরে আগমন ঘটল , কমপ্ল্যানের কৌটো থেকে দুচামচ শুকনো কমপ্ল্যান মুখে পুরে গজগজ শুরু করলঃ
"হুহহ ... ওকে আমি মোমো খাওয়ালুম কিন্তু ও আমায় সোডা খাওয়াল না, এখনতো প্রাণটা milkshake milkshake করছে৷ চলো milkshake খেয়ে আসি৷"
"মাথাটা পুরোটাই গেছে? নাকি একটু আধটু বাকি আছে?"
"আরে চলো না ... "
"দেখো আমায় জ্বালিয়ো না ...৭.৩০টা বেজে গেছে, জেঠুকে খেতে দিতে হবে ৮.৩০ টায়, অনেক কাজ আছে দুর হও এখান থেকে৷"

আমার ঝাল ঝাড়িতং খেয়ে দুঃখু দুঃখু মুখ করে ঘরে চলে গেল৷ কাজকম্ম সেরে আমিও প্রাণে ব্যাথা বোধ করলুম৷ আহা বেচারা milkshake খেতে চাইল আর আমি ঝাঝি খাওয়ালুম৷ কি করি, কি করি, ভাবতে ভাবতে ... ঝটপট আমার মধ্যে ইচ্ছে হেঁশেলের রাধুনি জেগে উঠল৷ ফ্রিজ খুলে দুধ, কালকের আনা কালাকাঁদ, ভ্যানিলা এসেন্সের শিশি আর গোটা চারেক এক্লেয়ার্স বের করলুম৷ বড় মিক্সার গ্রাইন্ডারে চার - পাঁচ হাতা দুধ, দু চামচ চিনি, এক ফোঁটা ভ্যানিলা এসেন্স, চারটে কালাকাঁদ আর ঐ এক্লেয়ার্স দিয়ে, এক মিনিট মতন মিক্সিটা বনবনিয়ে দিলুম৷ একটা বড় কফি মাগে ঢেলে, মিনিট ৫ ডীপ ফ্রীজে রেখে, ওপরে ৪-৫ টা বরফ দিয়ে, একটা চাপা দিয়ে গম্ভীর মুখে ঘরে এসে কাপটা এগিয়ে বললুমঃ
"ওসব মিল্কসেক-টেক, সোডা - মোডা খাওয়াতে পারব না, চা করে এনেছি খেলে খাও নইলে খেতে হবে না৷" ব্যাজার মুখে হাত বাড়িয়ে কাপটা নিয়ে, ঢাকনা খুলতেই , চমকে চ, বলেঃ
"এটা কি?"
"খেয়ে দেখো ..."
খেতে খেতে সে এতোই বিভোর হয়ে গেল যে উত্তর আর বেরোল না মুখ দিয়ে৷ আমার আরেকটা experiment সন্দেশ shake successful হওয়ার আর কুমার বাহাদুরকে হঠাৎ দেওয়া চমকে পরিতৃপ্ত হতে দেখে আমি খুশ আর চা 'র বদলে বহুকাঙ্খিত milkshake পেয়ে আমার কুমার বাহাদুর ডবল খুশ৷


Comments

Popular posts from this blog

একটা চেয়ার আর কিছু গল্পকথা

দোলনা চাপতে কার না ভালো লাগে....আমার তো ছোটবেলা থেকেই দোলনার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ...কিন্তু মুশকিলটা ছিল মানুষটা আমি ছোট থেকেই বেশ মোটাসোটা, ফলত দোলনা চাপলেই আশপাশ থেকে কেউ না কেউ বলে উঠত "এইরে দোলনাটা ভেঙে পড়ল বলে" বা "দোলনাটা হাতিদের চড়ার জন্য নয়" আরও কত কি...খুব কষ্ট হত.... কষ্টে ঝপাং ঝাপ দিয়ে নেমে পড়তাম। তখন কলেজে পড়ি...আমার সবথেকে ভালো বন্ধুর বাড়ির উল্টো দিকে একটা পার্ক ছিল...প্রথম দিনই ওদের বাড়ি যাওয়ার সময় লক্ষ্য করেছিলাম ওই পার্কটিতে দুটো দোলনা আছে এবং যার সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল "২-৫ বছরের শিশুদের জন্য" ... তাতে কি !!! প্রথম ভালোবাসার টানে মানুষ সব অন্যায় করতে পারে ... যেদিন ওদের বাড়ীতে রাত্তিরে থাকতাম ... ৬টার পর পার্ক বন্ধ হয়ে গেলে ... অন্ধকারে ছোট পাঁচিল টপকে আমরা পার্কে ঢুকতাম ... আর মনের আনন্দে আমি দোল খেতাম ... ভাবলাম কি ভালো ... কেউ কিছু বলার নেই বারণ করার নেই ... কোন সময় সীমা নেই যতখুশি যতক্ষণ খুশি দোল খাও। এইভাবে ২-৩ বার সাধ পুরণের পরই ... একদিন পার্কের পাশের বাড়ী থেকে চিৎকার শোনা গেল "কে?? কেএএএ? কারা পার্কে?? প্রায়ই পার্ক বন্ধ হব

পুরনো কাসুন্দি

সালটা ২০০৮, বাবা মারা যাওয়ার কিছু মাস পর, আমার পরম পূজনীয় জননী একটু সামলে উঠতেই, স্থির করলেন এখন থেকে ওনার জীবনে একম-অদ্বিতীয়ম লক্ষ্য হলো আমার বিয়ে দেয়া। ভেবেছিলো আমায় "পার" করেই সব কাজ মিটে যাবে, আমি খাবো বাঁশ এবং তিনি ড্যাং ড্যাং করে বাবার কাছে চলে গিয়ে সুখে - শান্তিতে করবেন স্বর্গবাস। তখনও কুমার বাহাদুরের আগমন ঘটেনি বলাই বাহুল্য। মাকে আমি বুঝিয়ে উঠতে পারতাম না যে, দেখে-শুনে বিয়ের জগতে আমার "দাম " নেই বললেই চলে। বিয়ের খদ্দেরদের ফর্সা, সুন্দরী, স্লিম এবং শিক্ষিত মেয়ে চাই। অনেকের আবার শিক্ষিত হলেও আপত্তি। সুতরাং সে গুড়ে রাশি রাশি বালি। তবুও মার অদম্য ইচ্ছে, শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা এবং ইমোশনাল কাতুকুতুর কাছে হার মেনে "দেখে-শুনে বিয়ে" পুজোর জোগাড়ে নেমে পড়ি। এই পুজোর সর্বপ্রথম নিয়ম, সুন্দর শাড়ি পরে, ভালো করে সাজুগুজু করে একটি ছবি তুলতে হবে।যাতে পাত্রপক্ষ ঝপ করে দেখে টপ করে পছন্দ করে ফেলে। তাই হলো সুন্দর সাজু গুজু এবং শাড়ী পরে ছবি তোলা হলো। এই ছবিটি যে কত জায়গায় ঘুরেছে তার ঠিক নেই। আত্মীয়-পরিজন, ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট, কুরিয়ার অফিস, খবরের কাগজের অফিস, ই-মেল

টিকিটপুরাণ

পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার টিকিট কাটা আর টানটান রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাস পড়া একই ব্যাপার। প্রতি মুহূর্তের উত্তেজনা, এই ফসকে গেল গেল হৃদকম্পে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। আমাদের আজ টিকিট কাটার পর্ব ছিল। নিজেরাই কাটি। দায়িত্ব থাকে কুমার বাহাদুরের ওপর। কাল রাত্তির থেকে যুদ্ধ চলছে। প্রতিবার বেড়াতে যাওয়ার আগে আমাদের whatsapp এ একটা গ্রূপ খুলে ফেলার দায়িত্বে থাকি আমি। যাওয়ার ঠিকানা বদলাতে থাকে , সঙ্গে গ্রূপের নামও। কাল রাত্তির থেকেই আমরা খুব উত্তেজিত, কারণ irctc র সাইট খুলে দেখা গেছে ৪ মাস আগে যে তারিখের টিকিট বুক করা যাচ্ছে, সেটা সেদিনই ওয়েটিং এ চলে যাচ্ছে। তাই একদম ঝপাঝপ কাজ সারতে হবে। নানা রকম আলোচনায় রাত্তির থেকে whtsapp এর গ্রূপ উত্তাল। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত, লক্ষ একটাই,কনফার্ম টিকিট চাই-ই চাই। সবার স্নায়ু টান টান কাল কি হবে, একেবারে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল খেলার মতন। রাতে শুয়েই পড়েছি হঠাৎ whtsapp গ্রূপে অংশুমানের মেসেজ রাত ১২ টার পর টিকিট কাটা যাবে মনে হয়। মেসেজ পড়া মাত্রই কুমার বাহাদুর ঝপ করে উঠে ল্যাপটপ খুলে বসল কিন্তু কোথায় কি !!! আবার অংশুমানের মেসেজ," না ১২ টা